রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৪৯ পূর্বাহ্ন
সম্পাদকীয়, কালের খবর :
গত বছরের অক্টোবরে টোল বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে বুড়িগঙ্গা প্রথম সেতুর টোল মওকুফের দাবিতে আন্দোলনের পর টোল আদায় বন্ধ থাকলেও ওই সেতুর টোল মওকুফ করেনি সরকার।
মঙ্গলবার কালের খবরে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে সড়ক ও জনপথ বিভাগের এক কর্মকর্তার মৌখিক নির্দেশে টোল আদায় বন্ধ থাকলেও পুলিশ ও স্থানীয় প্রভাবশালী চক্র নামে-বেনামে পরিবহন থেকে প্রতিদিনই বিপুল অঙ্কের চাঁদা আদায় করছে। জানা যায়, বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু বা বুড়িগঙ্গা প্রথম সেতুর টোল আদায় শুরু হয় ১৯৮৯ সালে।
বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ইজারাদার প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করে টোল আদায় করেছে সরকার। ২০১৫ সালে বিভাগীয়ভাবে টোল আদায় শুরু করার পর সরকারিভাবে জারিকৃত নতুন নীতিমালা অনুযায়ী টোল আদায় শুরু করা হলে পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা এর বিপক্ষে অবস্থান নেন। এরপর ২০১৭ সালের ১৫ মে নতুন টোল নীতিমালা বাস্তবায়নের জন্য নতুন ইজারাদার নিয়োগের দরপত্র আহ্বান করে সড়ক ও জনপদ অধিদফতর।
এ সময় একটি প্রতিষ্ঠান উল্লিখিত সেতু তিন বছরের জন্য ইজারা নিলে তাদের ওই বছরের অক্টোবরে টোল আদায়ের দায়িত্ব হস্তান্তর করা হয়। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী ইজারাদার প্রতিষ্ঠান নিরাপত্তা জামানতসহ প্রথম কিস্তি বাবদ উল্লেখযোগ্য অঙ্কের টাকা পরিশোধ করলেও সড়ক ও জনপথ বিভাগের এক কর্মকতার মৌখিক নির্দেশ থাকার কারণে টোল আদায় শুরু করতে পারছে না।
ফলে বর্তমানে বুড়িগঙ্গা প্রথম সেতুর টোল আদায় নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে জটিলতা। এ জটিলতার অবসানে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া দরকার। কারণ টোল আদায় বন্ধ থাকলেও পুলিশ ও স্থানীয় প্রভাবশালী চক্র পরিবহন থেকে প্রতিদিনই বিপুল অঙ্কের চাঁদা আদায় করছে।
দেশের বিভিন্ন স্থানে অনেক সেতুর টোল আদায় করা হচ্ছে বহু বছর ধরে। স্বভাবতই জনসাধারণের মনে প্রশ্ন, এসব সেতুর টোল কতদিন পর্যন্ত প্রদান করতে হবে? এ নিয়ে নানা জটিলতাও সৃষ্টি হচ্ছে।
একটি স্থাপনায় কতদিন পর্যন্ত টোল আরোপ করা হবে, সংশ্লিষ্ট নীতিমালায় এ সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য থাকা দরকার। এতে টোল আরোপ নিয়ে জটিলতার অবসান হবে। স্থাপনার গায়ে নির্মাণ তারিখসহ অন্যান্য তথ্যের পাশাপাশি টোল আরোপের মেয়াদ উল্লেখ থাকলে এ নিয়ে অসন্তোষ বা জটিলতা সৃষ্টির আর সুযোগ থাকবে না। সেতুর টোল আদায়ের পাশাপাশি কেউ যাতে চাঁদাবাজি করতে না পারে, সেদিকেও সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে কর্তৃপক্ষকে।